যশোর এক্সপ্রেস: ছাত্রলীগের সম্মেলন নিয়ে দেশজুড়ে ঝড় উঠেছে। অদৃশ্য ইশারায় এ নির্বাচন নিয়ে শুরু হয়েছে তালবাহানা। সবার আঙ্গুল যাচ্ছে কেবল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দিকে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তারা উদ্যোগী হলেই নতুন নেতৃত্বের সুযোগ আসবে। অন্যথায় নির্বাচন ঝুলে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশের পরও অদৃশ্য ইশারায় বিলম্ব হচ্ছে ছাত্রলীগের সম্মেলন। কোন দৃশ্যমান প্রস্তুতিও নেই। তবে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে মে মাসেই ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠনের সম্মেলনের সম্ভাবনার কথা। কারণ প্রধানমন্ত্রী কয়েক দফায় সংগঠনের শীর্ষ দুই নেতাকে দ্রুত নতুন সম্মেলনের বিষয়ে বলেছেন। সময়ও দিয়েছেন। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, ছাত্রলীগ সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম নানা কারণে কালক্ষেপন করছেন।
দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, গত ২৬ মার্চের সকালে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেয়ার পর সম্মেলনের ব্যাপারে নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। ওই দিন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমকে প্রধানমন্ত্রী দ্রুত সম্মেলন দিয়ে সাবেক হওয়ার তাগাদা দেন। পরে কয়েকটি জেলায় সম্মেলনের তারিখ জানানোর জন্য গণভবনে গেলে প্রধানমন্ত্রী সংগঠনের সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামানকে সম্মেলন দ্রুত করার তাগিদ দেন।
এর পর সর্বশেষ বাংলা নববর্ষের দিন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দু’জনকেই একসঙ্গে গণভবনে সম্মেলনের কথা জিজ্ঞেস করলে তারা প্রত্যুত্তরে বলেন, সিটি নির্বাচনের পরই সম্মেলন করা হবে। এমন কথা সংগঠনের দুই শীর্ষ নেতা গণমাধ্যমেও বলেছেন। তবে সিটি নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর ছাত্রলীগ অন্যান্য কর্মসূচি হাতে নেয়া শুরু করলেও সম্মেলনের দিকে যাচ্ছে না।
২০১৩ সালের জুলাই মাসে বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। দু’বছরের কমিটি আগামী জুলাইয়ে চার বছর পার করবে। এমন অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী বাধ্য হয়েই সম্মেলনের তাগাদা দিয়েছেন।
সম্মেলন নিয়ে কালক্ষেপন করলেও ছাত্রলীগের সাধারণ নেতাকর্মীরা আশা রাখছেন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার ওপর। তাই পদ প্রত্যাশীরা দৌঁড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন। মধুর ক্যান্টিন, পিয়ারু, হাকিম চত্বর, মিলন চত্বর, টিএসসিসহ শীর্ষ নেতানেত্রীদের বাসা-বাড়িতেও দিনরাত চলছে সম্মেলনী আড্ডা। যারা দীর্ঘদিন ছাত্রলীগ থেকে দূরে ছিল বা নিস্ক্রিয় ছিল তারাও এখন প্রধানমন্ত্রীর সম্মেলনের তাগাদার পর অনেক সক্রিয় হচ্ছেন।
নাম না প্রকাশের শর্তে বর্তমান কমিটির একজন সহসভাপতি বলেন, তুলনামূলক অভিজ্ঞ এবং সিনিয়রদের বয়সের ফাঁদে ফেলার অপকৌশল হিসেবে সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে। যাতে তুলনামূলক অনভিজ্ঞ এবং অনুগতদের পরবর্তী কমিটিতে শীর্ষে আনা যায় এবং নিজেদের অধিপত্য বজায় রাখা সম্ভব হয়।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেয়ার পরেও কেন্দ্রীয় সম্মেলনের প্রস্তুতির দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। দৃশ্যমান প্রস্তুতি না নিয়ে জেলা পর্যায়ের কমিটির সম্মেলনের দিকে দৃষ্টি দেয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সম্মেলনের জন্য জেলা কমিটির সম্মেলন দিতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। নেত্রী বলার পরেও পরবর্তী সম্মেলন উপলক্ষে এখনো কোনো সভাও করা হয়নি।
ছাত্র নেতারা ধারনা করতেছে সময়মত সম্মেলন না হলে , লাশের সংখ্যা বেড়ে ভারী করতে পারে ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠনের দুর্নামের ইতিহাস।