কবি গোলাম মোস্তফার বাড়ির জমি বেদখল
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ ঃ-
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় কবি গোলাম মোস্তফার বাড়ি বাঁশ দিয়ে ঘিরে রেখেছে দখলদারেরা। সম্প্রতি তোলা ছবি প্রথম আলো ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মনোহরপুর গ্রামে কবি গোলাম মোস্তফার বাড়ির জমির বেশ কিছু অংশ বেদখল হয়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার বাঁশ দিয়ে জমিটুকু দখল করে নেন কয়েকজন লোক। দখলি জায়গায় কবির কাচারিঘর ও কবির হাতে রোপণ করা বেশ কয়েকটি গাছ আছে। আরও আছে কবির ব্যবহৃত জিনিসপত্র, চিত্রশালা ও পাঠাগার।সরেজমিনে মনোহরপুর গ্রামে গেলে একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বৃহস্পতিবার একদল দখলদার এসে বাঁশ দিয়ে বেড়া দিয়ে দেন। কবি গোলাম মোস্তফা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফিরোজ খান-নুন জানান, কবির মূল বাড়িটি ছিল বর্তমান বাড়ি থেকে কিছুটা দক্ষিণে। ভারতের বালিগঞ্জ হাইস্কুল ও বাকুড়া জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক থাকা অবস্থায় কবি গোলাম মোস্তফা ১৯৫০ সালে অবসর নেন। এরপর তিনি পুরোনো বাড়িতে থাকতে না পেরে শ্বশুরবাড়ি মাগুরার কমলাপুরে চলে যেতে চেয়েছিলেন। তখন গ্রামের মানুষ তাঁকে রাস্তার ধারে পাঁচ বিঘা জমি দেন। কবি জমিটি দান হিসেবে গ্রহণ করেননি। তিনি ওই জমির পরিবর্তে আশপাশে তাঁর নিজস্ব জমি থেকে সবাইকে জমি দেন। যার কিছু ছিল লিখিতভাবে দেওয়া আর কিছু ছিল মৌখিকভাবে। তাঁদের একজনের সন্তান মনোহরপুর গ্রামের সদর উদ্দিন ও আলাউদ্দিন এখন দাবি করছেন কবির বাড়ির ভেতরে তাঁদের ২৪ শতক জমি পাওনা রয়েছে। কবির ছোট মেয়ে রাশিদা হক হেনা মুঠোফোনে জানান, তাঁদের দুই চাচাতো ভাই বাড়িটি দেখাশোনা করেন। তাঁরা চেয়েছিলেন, বাড়িটি স্মৃতি হিসেবে থাক। কিন্তু হঠাৎ করে বাড়ির জায়গা দখল শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে দখলদার সদর উদ্দিনের ছেলে জিহাদ মিয়া জানান, জমি তাঁরা পাবেন তাই দখল করেছেন। তাঁদের জমির পরিবর্তে কবি কোনো জমি বা টাকা দিয়েছিলেন এমন কথা তাঁদের জানা নেই। জমির পরিবর্তে জমি দিয়েছেন এমন একজন মনোহরপুর গ্রামের আমিন উদ্দিন মিয়ার ছেলে নুরুল আমিন বলেন, তাঁদের ৩৩ শতক জমির পরিবর্তে মাঠে ১৮ শতক জমি পেয়েছেন। যার কোনো লিখিত প্রমাণ ছিল না। শৈলকুপা উপজেলা ইউএনও সন্দীপ কুমার সরকার জানান, তিনি বাঁশের বেড়া উঠিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে যাঁরা দখল করছেন, দখলের পক্ষে তাঁদের কোনো কাগজপত্র থাকলে সেগুলো ১৫ এপ্রিল তাঁর কার্যালয়ে আনতে বলা হয়েছে। ২০১৪ সালের মে মাসে দখলদারেরা প্রথম দফায় কবির বাড়ির জমি দখলের চেষ্টা করেন। সে সময় পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হলে প্রশাসন তৎপর হয়। এতে দখলপ্রক্রিয়া বন্ধ হয়।
ঝিনাইদহে জোড়াশিশুর চিকিৎসার দায়িত্ব নিল আচল ট্রাস্ট
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ ঃ-
গত ২৬ মার্চ যশোর শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া জোড়া লাগানো দুই মেয়ের মা হয়েছিলেন ঝিনাইদহের তাকিয়া সুলতানা লাবনী। এখন দুই শিশুসহ তাদের মা সুস্থ আছেন।
তাদের মাথা, হাত ও পা পৃথক থাকলেও বুক থেকে পেট পর্যন্ত জোড়া লাগানো। মেয়ে দুটির নাম রাখা হয়েছে লাইবা ও লাবিবা। । মেয়ে দুটির ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত ছিলেন পরিবারের সদস্যরা।এদিকে শুক্রবার বিকালে জোড়া দুই শিশুর চিকিৎসা দায়িত্ব নিলেন ঢাকাস্থ বেসরকারি সংস্থায় আচল ট্রাাষ্ট। শিশু দুটিকে অপারেশনের মাধ্যমে আলাদা করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে এই উদ্যোগ তাদের। শুক্রবার বিকেলে আচল ট্রাষ্টের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম শোভন অ্যাম্বুলেন্সে করে তাদের নিজ বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। বাড়ি থেকে যশোর ও যশোর থেকে বিমান যোগে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাদের। সেখানে পূর্ণ চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের আলাদা করা হবে। যদি হাসপাতালে তাদের আলাদা করা সম্ভব না হয় তবে উন্নত কোন দেশে তাদের নিয়ে যাওয়া হবে। আচল ট্রাষ্টের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম আরো জানান, হাসপাতালে সকল পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে তাকে সু-চিকিৎসা দেওয়া হবে। এ পর্যন্ত আচল ট্রাষ্টের পক্ষ থেকে অনেক শিশুকে চিকিৎসা দিয়ে ভালো করা সম্ভব হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আড়াই বছর আগে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার লৌহজং গ্রামের নজরুল ইসলামের মেয়ে তাকিয়া সুলতানা লাবনীর সাথে যশোর সদর উপজেলার বাগডাঙা গ্রামের আলতাফ হোসেনের বিয়ে হয়। লাবনীর স্বামী বর্তমানে মালয়েশিয়া প্রবাসী। গত ২৬ মার্চ যশোর শহরের কুইন্স হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে জোড়া লাগানো শিশুর জন্ম দেন লাবনী। শিশু দুটির শরীরের মাথা, হাত ও পা পৃথক থাকলেও বুক থেকে পেট পর্যন্ত জোড়া লাগানো। জন্মের পর কয়েকদিন শিশু দুটিকে ইনকিউবেটরে রাখতে হয়েছিল। তারা খাওয়া, ঘুমানো, প্রসাব-পায়খানা পৃথকভাবে করছে। স্বাভাবিক ভাবে খাবার গ্রহণ করছে। হাসছে, কাঁদছে ও খেলছে। সুস্থ হওয়ার পর নানা বাড়ি আনা ঝিনাইদহের লৌহজং গ্রামে আনা হয়। সেখানে লাইবা ও লাবিবাকে দেখতে প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় করছেন। পরিবারের সদস্যরা বলছেন, আল্লাহ যা দিয়েছেন তা নিয়েই খুশি তিনি। এলাকাবাসী বলছেন- এমন ঘটনার কথা তারা টিভিতে দেখেছের, লোকমুখে শুনেছেন। এবার বাস্তবে দেখলেন।এবিষয়ে ঝিনাইদহের শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দুলাল কুমার চক্রবর্তী জানান, শিশু দুটির হৃদপি- পৃথক হলে অপারেশনের মাধ্যমে তাদের আলাদা করা সম্ভব।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ১৫দিন ব্যাপী বৈশাখী মেলার উদ্বোধন
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ ঃ-
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বর্ষবরণ উপলক্ষে ১৫ দিন ব্যাপী বৈশাখী মেলার উদ্বোধন হয়েছে। শহরের নলডাঙ্গা ভুষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে এ মেলা শুরু হয়। সন্ধ্যায় মেলার উদ্বোধন করেন, ঝিনাইদহ-৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ারুল আজীম আনার।
মেলা উপলক্ষে বিকেলে শহরের প্রধান প্রধান সড়কে এক র্যালী র্যালী বের হয়। র্যালীতে স্থানীয় সামাজিক, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ গ্রহন করেন। র্যালী শেষে সন্ধ্যায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মেলা উদযাপন কমিটির সভাপতি অজিত ভট্ট্রাচার্য। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেলোয়ার হোসেন, কালীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মকছেদ আলী, কালীগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান মতি, শাহনাজ পারভীন, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাজেদুল হক লিটন, ছাত্রলীগের সাবেক উপজেলা সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সোহেল, বর্তমান সভাপতি ইসরাইল হোসেন প্রমুখ।
ঝিনাইদহে র্যাবের অভিযানে শ্যুটারগান ও গুলি উদ্ধার
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ ঃ-
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গ্যাড়ামারা গ্রাম থেকে শ্যুটারগান ও দুই রাউণ্ড গুলি উদ্ধার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। বৃহস্পতিবার ভোরে এ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। র্যাব-৬ ঝিনাইদহ ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর আশরাফ উদ্দীন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভোরে র্যাব জানতে পারে, গ্যাড়ামারা গ্রামে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গোপন বৈঠক করছে।খবর পেয়ে র্যাব সদস্যরা সেখানে অভিযান চালায়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে একটি শ্যুটারগান ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। তিনি আরো জানান, অস্ত্রধারীরা ওই এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রস্তুতি নিচ্ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহসদর থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে আগুনে নির্মাণ শ্রমিকের বসত-বাড়ি ভষ্মিভূত
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ ঃ-
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে এক ইমারত শ্রমিকের বসত-বাড়ি পুড়ে ভষ্মিভূত হয়েছে। এতে চাউল, ধান, আসবাবপত্র, স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার কাশীপুর গ্রামের রাজমিস্ত্রি হাশেম আলীর বাড়িতে।
খবর পেয়ে কালীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। হাশেম আলী জানান, আগুন লাগার সময় বাড়িতে কেউ ছিলনা। আগুনে তার টিনের তৈরী বাড়িটি সম্পূর্নরুপে ভষ্মিভূত হয়ে গেছে। এতে তার ২ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ ঃ-
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের ৭২০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীদের মধ্যে বিনামূল্যে সার, বীজ বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে চলতি ২০১৫-১৬ মৌসুমে রোপা আউশ ধান চাষে কৃষক প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় এ সার ও বীজ বিতরণ করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মানোয়ার হোসেন মোল্লার সভাপতিত্বে সার,বীজ বিতরণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, ঝিনাইদহ-৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ারুল আজীম আনার।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান মতি, ইউপি চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম মন্টু, আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম সানা, স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোশাররফ হোসেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা কৃষকলীগের যুগ্ম আহবায়ক আমিনুর রহমান তপু, কৃষক আসাদুজ্জামান, উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে এমপি আনার বলেন, বর্তমান সরকার কৃষক বান্ধব সরকার। এই সরকার কৃষকদের অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। তাই কৃষকের কথা বিবেচনা করে সরকার বিনামূল্যে তাদের সার,বীজসহ নগদ টাকা প্রদান করছে। তিনি কৃষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনার সার,বীজ নিয়ে সঠিকভাবে চাষাবাদ করবেন। উল্লেখ্য অনুষ্ঠানে ৭২০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীদের মধ্যে বিনামূল্যে ২৮.৮ মেঃ টন সার, ২.৫ মেঃ টন উবশী বীজ, ২.২ মেঃ টন নেরিকা বীজ ও ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে ৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে ৭২০ জন কৃষকের প্রত্যককে ২০ কেজি ইউরিয়া সার, ১০ কেজি ডিএপি, ১০ কেজি এমওপি, ৫ কেজি উবশী ও ১০ কেজি নেরিকা বীজ প্রধান অতিথি এমপি আনার তুলে দেন।