|| গাজীপুর সিটি করপোরেশনের (জিসিসি) মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক এম এ মান্নানকে অসুস্থতাজনিত কারণে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ঢাকার বারডেম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তাকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে কাশিমপুর কারাগারের পার্ট-১ থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের পার্ট-১ এর জেলার ফরিদুর রেজা রুবেল জানান, মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নান বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। তার কিডনীতে সমস্যা রয়েছে। এছাড়া ডায়াবেটিক, রক্তচাপ কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন জটিলতা থাকায় তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের তত্ত্বাবধানে বারডেম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত: মেয়র মান্নানের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে পুলিশের দেয়া দু’টি অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত। গত বছর ২৭ ডিসেম্বর বিএনপি’র ডাকা হরতাল চলাকালে সিটি করপোরেশনের বড়বাড়ি এলাকায় সাংবাদিক বহনকারী একটি মাইক্রেবাস এবং একটি লেগুনা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এমএ ফরিদ বাদী হয়ে অধ্যাপক এম এ মান্নান, ফজলুল হক মিলনসহ ৩০ জনের নামে এবং অজ্ঞাত আরও ১৫/২০ বিএনপি নেতাকর্মীর নামে জয়দেবপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্তের পর এম এ মান্নান, ফজলুল হক মিলনসহ ৪৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিলে তা ৩০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার গাজীপুরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দাখিল করা হয়। ওইদিন আদালতের বিচারক বেগম ফারজানা খান নথি পর্যালোচনা করে অভিযোগপত্রটির শুনানির জন্য মামলার ধার্য্য দিন ১২ মে তারিখ নির্ধারণ করেন। পরে গত ১২ মে মঙ্গলবার দুপুরে মান্নানের অনুপস্থিতিতে তার আইনজীবীরা শুনানিতে অংশ নিলে আদালত পুলিশের দাখিলকৃত অভিযোগপত্র বিচারিক আদালতে গ্রহণ করেন। এ মামলায় ১৩ জুলাই পরবর্তী শুনানীর জন্য দিন ধার্য্য করেছে আদালত।
এছাড়া জয়দেবপুর থানা পুলিশ বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের করা অপর একটি মামলায় তদন্ত শেষে মান্নানসহ ৬ জনের নামে গত ১৪ মে চার্জশিট আদালতে জমা দেয়। ১৭ মে রোববার মামলার ধার্য তারিখে গাজীপুরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট দাখিল করলে আদালতের বিচারক বেগম আবেদা সুলতানা তা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে প্রেরণ করেন। মামলার পরবর্তী ধার্য তারিখ ১৯ মে। চার্জশিটে মেয়র মান্নানকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে। গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর জেলা শহরের জোড় পুকুর পাড় এলাকায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে অজ্ঞাত নামা ১০/১২ জন দুষ্কৃতিকারী একটি বিস্ফোরক দ্রব্যের বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ঘটনায় জয়দেবপুর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া বাদী হয়ে পরদিন মামলাটি দায়ের করেন।
মেয়র মান্নানের আইনজীবী মঞ্জুর মোর্শেদ প্রিন্স জানান, মেয়র মান্নানের বিরুদ্ধে জয়দেবপুর, শ্রীপুর ও কালিয়াকৈর থানায় আরো ৫টিসহ সর্বমোট ৭টি মামলা রয়েছে। এ সব মামলার মধ্যে ৩ টিতে তিনি জামিনে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে গাজীপুরে যাত্রীবাহীবাসে পেট্রলবোমা হামলার মামলায় ১১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় মেয়র মান্নান ঢাকার বারিধারার বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার হন। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন। এ মতাবস্থায় গত ৮ মার্চ থেকে প্যানেল মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।