ঝিনাইদহে পুলিশি অভিযানে এক বিএনপি নেতাসহ আটক ২১
আতিকুর রহমান টুটুল,ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ঃ ঝিনাইদহ জেলার ছয় উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিএনপি নেতাসহ ২১ জনকে আটক করে। শনিবার শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে শৈলকুপা পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি ঠাণ্ডুকে ঝিনাইদহ শহরের নতুন কোর্টপাড়ার বাসা থেকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধের নাশকতার অভিযোগ রয়েছে পুলিশ জানায়। এছাড়া ঝিনাইদহ সদর থেকে ছয়জন, শৈলকুপা থেকে তিনজন, হরিণাকুণ্ডু থেকে তিন, কালীগঞ্জ থেকে চার, কোটচাঁদপুর থেকে দুই ও মহেশপুর থেকে দু’জনকে আটক করা হয়েছে। ঝিনাইদহ থানা সুত্রে জানাগেছে আটকৃতদের বিরুদ্ধে থানায় চাঁদাবাজি, নাশকতা, বোমাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। থানা সুত্রে আরোও জানান,আটকৃতদেরকে দুপুরের মধ্যে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।
হরিণাকুন্ডুতে কারেন্ট সুদের রমরমা ব্যবসা ৪০ হাজার টাকা লোন নিয়ে ৬ লাখে দিয়েও ঋন শোধ হয়নি নবিছদ্দিনের
আতিকুর রহমান টুটুল,ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ঃ ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে কারেন্ট সুদের জালে জড়িয়ে মানুষ নিঃস্ব হচ্ছেন। সেই সাথে হারাচ্ছেন ভিটে বাড়ি ও সুখের সংসার। দ্রুত সুদের টাকা বৃদ্ধি হয় বলে এই সুদে কারবারের নাম হয়েছে কারেন্ট লোন। একশ টাকায় সপ্তহে ২০ টাকার অন্বাভাবিক সুদ দিতে হয়। হরিণাকুন্ডু শহরের হাসপাতাল মোড়, পার্বতীপুর, দখলপুর বাজার, জোড়াদহ, ভায়না, শাখেরীদহ বাজারসহ প্রতিটি গ্রামে গ্রামে এই কারেন্ট সুদের জমপেশ ব্যবসা চলছে। ১০/১২ জনের সমিতি গঠন করে আবার গোপনে কতিপয় মানুষ চড়া সুদে টাকা দাদন দিচ্ছে। শহর ও গ্রামের অসহায় ও মধ্যবিত্ত মানুষ এ সব সমিতি থেকে ঋন নিয়ে বেকায়দায় পড়ছে। হরিলাকুন্ডু শহরের হাসপাতাল মোড়ের নবিছদ্দিন ৪০ হাজার টাকা কারেন্ট লোন নিয়েছিলেন। তিনি ৬ লাখ টাকা দেয়ার পরও তার সুদ শেষ হয়নি। শেষ পর্যন্ত শহরের বাড়ি সুদখোরদের নামে লিখে দিতে হয়েছে। আশরাফুল নামে এক ব্যক্তি হরিলাকুন্ডুর হাসপাতাল মোড়ের সুদখোর রবিউলের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। সুদাসলে এক লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়েও তিনি রেহায় পাননি। শেষ পর্যন্ত হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে তিনি সুদখোরদের হাত থেকে বাঁচেন। হরিনাকুন্ডুর হাসপাতাল মোড়ের দধি ব্যবসায়ী সুজন ও ফল ব্যবসায়ী শিমুল, ধলা, ইলেক্ট্রনিক ব্যবসায়ী আরিফ, জোড়াদহের কাদের মৌলভীর ছেলে মৃদৃল ও একই গ্রামের আনিছুর রহমানসহ বহু মানুষ সুদখোরদের অত্যাচারে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। অনুসন্ধান করে জানা গেছে হাসপাতাল মোড়ের আইনাল ও তার ছেলে মিলন, রবিউল, মান্দারতলার দেলু, সাতব্রীজের রণি, ভবানীপুরের বাচ্চু মোল্লা, ঘোড়দার আব্দুস সামাদ আজাদ, জোড়াপুকুরিয়ার আসাদুল, আলতাফ, জোড়াদহের সিরাজ উদ্দীনের ছেলে আলতাফ হোসেন, একই গ্রামে আবু মোল্লাহ, রফিকুল ইসলাম, বাকচুয়ার জহুরুলসহ অর্ধশত সুদখোর এই জঘন্য ব্যবসার সাথে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। সুদখোরদের ভয়ে পালিয়ে বেড়ানো সুজন জানান, সুদাসল দু‘ই প্রদান করা হয়, তারপরও ঋনের টাকা পরিশোধ হয় না। পাওনা থাকে বছরের পর বছর। তিনি আরো জানান, চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়া সুদের খেসারত দিতে গিয়ে গ্রাহকের হারাতে হয় বসত ভিটা, সুখের সংসার, নয়তো গোয়ালের গরু। শেষ সম্বল বিক্রি করে সুদের টাকা পরিশোধ করতে হয়। আর এভাবেই দিনের পর দিন কাবলিওয়ালাদের মতো সুদখোরদের অত্যাচার চলছে ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডু উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। শাখেরীদহ বাজারেও এমন ভয়ংকর সুদ ভিত্তিক ব্যবসা চলছে। সেখানে বহু মানুষ সুদাসল দিয়ে ঋন শোদ করতে না পেরে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। হরিণাকুন্ডু উপজেলার শিতলী গ্রামের মতুরেশ কুমার পাচ বছর আগে সুদখোর আব্দুস সামাদ আজাদের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকার ঋন নেন। লাভসহ তাকে ৫৩ হাজার টাকা প্রদান করার পরও আরো ৩১ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। হাজী আরশাদ আলী ডিগ্রী কলেজের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী ডাবলু মিয়া আব্দুস সামাদের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা নিয়ে তাকে আসল ও লাভসহ ১ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা পরিশোধ করেছে। জোড়াদহ বাজারে মন্টু মোল্লার ছেলে আলতাফ হোসেন চাল ব্যবসার আড়ালে দাদন ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। একই এলাকার সিরাজুদ্দীনের ছেলে আলতাফ হোসেনও এই কারেন্ট সুদে টাকা লগ্নি করে রাতারাতি বড় লোক হয়েছেন বলে এলাকাবাসি জানায়।
শৈলকুপার পাট ক্ষেত থেকে ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার
আতিকুর রহমান টুটুল,ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ঃ ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের একটি পাট ক্ষেত থেকে শনিবার আব্দুল মান্নান (৫৫) নামে এক ব্যাক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আব্দুল মান্নান মোহাম্মদপুর গ্রামের মৃত মজিবুর বিশ্বাসের ছেলে। শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসেম খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মোহাম্মদপুর গ্রামে পাটক্ষেতে আব্দুল মান্নানের লাশ পড়ে থাকতে দেখে লোকজন পুলিশকে খবর দেয়। শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে খবর পেয়ে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। আব্দুল মান্নান কিভাবে মারা গেছে তা বোঝা যাচ্ছে না। ময়না তদন্ত শেষে বোঝা যাবে। নিহত আব্দুল মান্নানের ভাই শরিফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, শুক্রবার সকালে দোকানের সদয় আনতে তার ভাই চড়িয়ারবিল বাজারে যান। তাপর থেকে তিনি আর বাড়ি ফেরেনি।