ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যানে দেশে বহুল আলোচিত হরিণাকুন্ডু উপজেলার বিন্নি গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে আসমানী নির্যাতনের ঘটনায় অবশেষে থানায় মামলা হয়েছে। আসমানীর মা রোকেয়া বেগম বৃহস্পতিবার বাদী হয়ে হরিণাকুন্ডু থানায় মামলা করেন। মামলা নং ১৮। থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারার মামলাটি রেকর্ড হয়। বুধবার ফেসবুক ও ইন্টারনেট দুনিয়ায় হরিণাকুন্ডু উপজেলার বিন্নি গ্রামের নবম শ্রেনীর ছাত্রী আসমানী নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ হলে দেশ ব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। জেলা প্রশাসক মোঃ শফিকুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন ঘটনাটি মনিটরিং করেন এবং মামলা গ্রহনের নির্দেশ দেন। ফেসবুক এক্টিভেটরসদের আশ্বস্ত করে জবাবও দেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার। এদিকে ঘটনার জানাজানি হওয়ার পর পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন ঘটনাস্থলে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পাঠিয়ে তদন্ত করেন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন। ফলে বিন্নি গ্রামের মাতুব্বরদের সমাজিক চাপ ও রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে আসমানীর মা হরিণাকুন্ডু থানায় উপস্থিত হয়ে বৃহস্পতিবার এজাহার দাখিল করেন। পুলিশ আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা করছে বলে জানান হরিণাকুন্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এরশাদুল কবীর। উল্লেখ্য বিন্নি গ্রামের লম্পট সিরাজুল ও মিল্টন গভীর রাতে দরজা ভেঙ্গে আসমানির পাশবিক নির্যাতনের জন্য ঘরে প্রবেশ করে। আসমানি ও তার মায়ের আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে লম্পট সিরাজুল উল্টো আসমানীর উপর অপবাদ চাপিয়ে দেয় এবং অমানুষিক শারীরীক নির্যাতন চালায়। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করার তিন ঘন্টা পর জ্ঞান ফেরে। বুধবার বিলম্বে হলেও বিষয়টি মিডিয়ায় প্রচার হলে ইন্টারনেট দুনিয়ায় ঝড় ওঠে। ঝিনাইদহের সহকারী পুলিশ সুপার গোপীনাথ কানজিলাল বিন্নি গ্রাম পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পান। তিনি আসমানীকে দেখতে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালেও যান। কিন্তু তার আগেই আসমানী ও তার মা হাসপাতাল থেকে চলে যান। হরিণাকুন্ডু থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক আসাদুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানতে পারেন আসামানীদের প্রতিবেশি সিরাজুল ইসলাম বেশ কিছুদিন ধরেই তাকে উত্যক্ত করতো। গত ৩/৪ দিন আগে আসমানীর ঘরে প্রবেশ করার সময় সিরাজুল ধরা পড়ে। বিষয়টি গ্রামে জানাজানি হয়ে গেলে সিরাজুল ও তার লোকজন আসমানীকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে চরম ভাবে নির্যাতন করে। আসমানীর উপর চরম নির্যাতনের ঘটনা ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে চারিদিকে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। শোভা নামে একটি বেসরকারী সংস্থা জেলা প্রশাসককে বিষয়টি অবহিত করে প্রতিকার চান। এদিকে মামলা হলেও লম্পট সিরাজুল এখনো গ্রেফতার হয়নি বলে জানা গেছে।
——————————————————————-
জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে এলাকাবাসির প্রশ্ন , হরিণাকুন্ডুর কুলবাড়িয়া বাজারে জুয়ার আসর আর কত দিন চলবে ?
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার কুলবাড়িয়া বাজারে যাত্রার নামে জুয়া, লটারী ও অশ্লিলতার বিষ ছড়িয়ে পড়েছে। প্রচন্ড গরমে দিনের পর দিন উচ্চ শব্দে এই নোংরামী চলতে থাকায় এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। হরিণাকুন্ডুর ফলসী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমানের নেতৃত্বে এই অসামাজিক কাজ চলছে বলে সরেজমিন পরিদর্শন করে জানা গেছে। হরিণাকুন্ডু থানা সুত্রে বলা হয়েছে গত ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে সেখানে মেলার আয়োজন করা হয়। মেলার উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি। প্রথম দিকে দোকান পাট ও কাঠের আসবাবপত্র বিক্রি করা হতো। এরপর ধীরে ধীরে আয়োজকদের অশ্লিলতার মুখোশ খসে পড়ে। যাত্রার নামে জুয়া ও নগ্ন নারীদের নাচানো শুরু হয়। ইতিমধ্যে মেলার অনুমতি শেষ হয়ে গেছে। এখন র্যাফেল ড্রর নামে চলছে ভিন্ন মাত্রার জুয়া খেলা। বুধবার ৮০ হাজার টাকার লটারী ঘোষনা করা হয়। বৃহস্পতিবার লাখ টাকার লটারীর টিকেট বিক্রি চলে তামাম হরিণাকুন্ডু জুড়ে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সেখানে কোন প্রশাসন নেই। আয়োজকরা যেন মগের মুল্লুক পেয়েছে। প্রতি নাইটে তারা হরিণাকুন্ডু থানায় মোটা অংকের টাকা দিচ্ছে বলেও কথিত আছে। এ জন্য বিনা অনুমতিতে দিনে পর দিন এই জুয়ার আসর চালাতে পারছে। ইতিমধ্যে লটারীর আসরের টাকা জোগাতে এলাকায় চুরি ডাকাতি শুরু হয়েছে। এই মেলার আসর চলার মধ্যেই পার্শ্ববর্তী আন্দুলিয়া গ্রামের তরিকুল ইসলামের বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে। ডাকাতরা তার বাড়ি থেকে নগদ ২৫ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল সেট নিয়ে গেছে। এলাকাবাসি লটারীর নামে এই অবৈধ জুয়ার আসর বন্ধের দাবী জানিয়ে আসলেও প্রশাসনের কানে এখনো পানি যায় নি। এ বিষয়ে হরিণাকুন্ডু থানার ওসি ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকতার মোবাইলে যথাক্রমে ৩.৩৪ ও ৩.৩৫ টায় ফোন করলেও তারা ফোন রসিভি করেন নি।
………………………………………………………………………………
ঝিনাইদহে রোগ প্রতিরোধে এ্যাডভোকেসি সভা
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ পার্টনারস ইন সোস্যাল সেক্টর ম্যানেজমেন্ট রিসার্স ট্রেনিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর উদ্যোগে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদপিন্ড ও মস্তিস্ক আক্রান্ত হওয়া ও ডায়াবেটিকস প্রতিরোধ কল্পে ঝিনাইদহে এ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জনের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সিভিল সার্জন অফিসের সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা ওয়াহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সবক্তব্য রাখেন মখলেছুর রহমান, আবুল হাশেম, আবুল হোসেন, দারা জগলুর রহমান সিদ্দিকী, নজরুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, ইসরাইল হোসেন, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ। স্বাস্থ্য শিক্ষা বুরে্য, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা মন্ত্রনালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।