আতিকুর রহমান টুটুল, ঝিনাইদহ ||
ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গড়ে ওঠা কারেন্ট সুদের কারবারীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। গত কয়েক দিন ধরে হরিণাকুন্ডুর কাপাশহাটিয়া গ্রামের স্বপন হালদারকে সুদখাররা ভিটে ছাড়া করতে অত্যাচার নির্যাতন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রথখোলা ও কাপাশহাটিয়া গ্রামের প্রভাবশালী সুদখোররা সুধির হালদারের ছেলে স্বপন হালদারকে তার ভিটে বাড়ি লিখে দিয়ে ভারতে চলে যাওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে কারেন্ট সুদের জালে জড়িয়ে হরিণাকুন্ডুর মানুষ নিঃস্ব হচ্ছেন। সেই সাথে হারাচ্ছেন ভিটে বাড়ি ও সুখের সংসার। দ্রুত সুদের টাকা বৃদ্ধির কারণে ঋন গ্রহীতারা পরিশোদ করতে না পেরে জমি জাতি সুদখোরদের নামে লিখে দিয়ে এলাকা ছাড়া হচ্ছেন। হরিণাকুন্ডু শহরের হাসপাতাল মোড়, পার্বতীপুর, জটারখালী, লালন বাজার, ভোড়াখালী, দখলপুর বাজার, জোড়াদহ, ভায়না, শাখেরীদহ বাজারসহ প্রতিটি এলাকায় এই কারেন্ট সুদের জমপেশ ব্যবসা চলছে। হরিনাকুন্ডু শহরের হাসপাতাল মোড়ের সুদখোররা দিনকে দিন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। কোন ভাবেই তাদের প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। জানা গেছে হরিণাকুন্ডু হাসপাতাল মোড়ের আইনাল ও তার ছেলে মিলন, রবিউল, মান্দারতলার দেলু, ঘোড়দার আব্দুস সামাদ আজাদ, জোড়াপুকুরিয়ার আসাদুল ও একই গ্রামের আলতাফ সুদে কারবারী করে মানুষের মাঝে আতংক সৃষ্টি করেছে। তাদের অত্যাচারে একাধিক মানুষ হাসপাতাল মোড় ছেড়ে পালিয়েছে। হরিণাকুন্ডু হাসপাতাল মোড়ের নবিছদ্দিন ৪০ হাজার টাকা কারেন্ট লোন নিয়েছিলেন। তিনি ৬ লাখ টাকা দেয়ার পরও তার সুদ শেষ হয়নি। শেষ পর্যন্ত শহরের বাড়ি সুদখোরদের নামে লিখে দিতে হয়েছে। আশরাফুল নামে এক ব্যক্তি হরিলাকুন্ডুর হাসপাতাল মোড়ের সুদখোর রবিউলের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। সুদাসলে এক লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়েও তিনি রেহায় পাননি। হরিনাকুন্ডুর হাসপাতাল মোড়ের দধি ব্যবসায়ী সুজন ও ফল ব্যবসায়ী শিমুল, ধলা, ইলেক্ট্রনিক ব্যবসায়ী আরিফ, জোড়াদহের কাদের মৌলভীর ছেলে মৃদৃল ও একই গ্রামের আনিছুর রহমানসহ বহু মানুষ সুদখোরদের অত্যাচারে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সুদখোরদের ভয়ে পালিয়ে বেড়ানো সুজন জানান, সুদাসল দু‘ই প্রদান করা হয়, তারপরও ঋনের টাকা পরিশোধ হয় না। পাওনা থাকে বছরের পর বছর। আর এভাবেই দিনের পর দিন কাবলিওয়ালাদের মতো সুদখোরদের অত্যাচার চলছে ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডু উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। বিষয়টি প্রশাসন অবগত হলেও অভিযোগ না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তা করতে পারছেন না। তবে হরিণাকুন্ডুর বিভিন্ন পুলিশ ক্যাম্পের আইসিরা সুদখোরদের পক্ষ নিয়ে টাকা আদায় করে দিচ্ছেন বলে কথিত আছে। এ বিষয়ে হরিণাকুন্ডুর মানুষ জেলা প্রশাপসক ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

হরিণাকুন্ডুর হাসপাতাল মোড়ের সুদখোররা আরো বেপরোয়া প্রতিকার নেই
1464 মোট পাঠক সংখ্যা 1 আজকের পাঠক সংখ্যা