কালীগঞ্জের কোলা হাইস্কুলের ভবনে ফাঁটল, ক্লাস চলছে গাছ তলাই

আতিকুর রহমান টুটুল,ঝিনাইদ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের কোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভবনের দেওয়ালে ফাঁটল দেখা দেওয়ায় শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে আতঙ্কে বিরাজ করছে। কোন রকমের দূর্ঘটনা এড়াতে ভবন ছেড়ে বাইরের গাছতলায় পাঠদান চালানো হচ্ছে। গত কয়েক দিন আগের দু’দফা ভূমিকম্পে বিদ্যালয়টির দো’তলা বিশিষ্ট মুল ভবনের দেওয়ালের বেশ কিছু স্থানে দৃশ্যমান ফাঁটল দেখা দিয়েছে। শিক্ষকরা বলছেন,শ্রেণীকক্ষ সংকটের কারনে বাইরে পাঠদান চালানো ছাড়া উপায় নেই। তবে বর্ষা শুরু হলে তারা কি করবেন সে চিন্তায় আছেন। বিদ্যালয়সূত্রে জানাগেছে,১৯৬১ সালে এ এলাকাবাসীর প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। সে সময়ে তাদের আর্থিক সহযোগিতায় স্থানীয় ইট বালু দিয়ে ৬ কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মান করা হয়। পরবর্তীতে শিক্ষার্থী বৃদ্ধিসহ প্রয়োজনের তাগিদে একই ভাবে দো’তলায় রুপ দেয়া হয় ভবনটিকে। পুরাতন ভবন হওয়ায় কয়েক বছর আগেই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হলেও বিগত ২০১৪ সালের প্রথম দিকে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার ভবনটি পরিদর্শন করে পরিত্যক্ত ঘোষনা করেন। kaligonj kola high school 1kaligonj kola high schoolতারপরও শ্রেণীকক্ষের অভাবে এ ভবনটির ৬ টি কক্ষে পাঠদানের কাজ চালানো হচ্ছিল। কিন্ত সম্প্রতি বয়ে যাওয়া দু’দফার ভূমিকম্পে ভবনের চারপাশে নতুন করে ফাঁটল দেখা দিয়েছে। ছাদ থেকে প্লাস্টার খসে খসে পড়ছে। এখন বাধ্য হয়ে ওই ভবনের ক্লাসগুলোর পাঠদান বাইরের গাছতলায় নিতে হচ্ছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিজয় বিশ্বাস জানান, এ বিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ১২’শ। মাধ্যমিক পর্যায়ে এ উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী বিদ্যালয়টিতে লেখাপড়া করে থাকে। সব ধরনের পরীক্ষার ফলাফলও সন্তোষজনক। বিদ্যালয়টিতে আরও দুটি একতলা ও দুটি টিন সেটের ভবন রয়েছে। কিন্ত সব ক্লাসে শাখা থাকায় এক সাথে ১৪ টি কক্ষে ক্লাস বসাতে হয়। এর মধ্যে টিন সেটের ৩ টি কক্ষ অত্যন্ত জ্বরাজীর্ণ হলেও চালিয়ে নিচ্ছেন। ৬ টি ক্লাস চালানোর মূলভবনের বেশ কিছু স্থানে মোটা ফাঁটল দেখা দিয়েছে। যে কারনে ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তিনি আরও জানান,সম্প্রতি ভুমিকম্পের দু’দফার হানায় শিক্ষক,শিক্ষার্থীদের সাথে অভিভাবকরাও সমানভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। ফলে বাধ্য হয়ে এখন বাইরের গাছতলায় চট বিছিয়ে শিক্ষার্থীদের বসিয়ে ক্লাস নিচ্ছেন। তিনি আরও জানান, একটি ভবনের জন্য অতীতে অনেক ধর্ণা দিয়েছেন। কিন্ত কাজের কাজ হয়নি। এখন চিন্তায় আছেন বর্ষা শুরু হলে বাইরের ক্লাসগুলো কোথায় চালাবেন। বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুল খালেক মোল্যা জানান,বিদ্যালয়ের ফাঁটল ধরা মূল ভবনটি অনেক পুরাতন। স্থানীয় ইট বালু দিয়ে অপরিকল্পিত ভাবে নির্মিত ভবনটিতে যেভাবে ফাঁটল দেখা দিয়েছে সেখানে ক্লাস চালানোটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে দূর্ঘটনা এড়িয়ে চলার জন্য তিনি বাইরে পাঠদান চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। কোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইউব হোসেন জানান,বিদ্যালয়টিতে একটি সরকারী ভবন হওয়া খুবই জরুরী। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মানোয়ার হোসেন মোল্যা জানান,ভুমিকম্পে বিদ্যালয়টির অত্যন্ত পুরাতন মূলভবনে ফাঁটল দেখা দেওয়ায় শিক্ষকদেরকে বিকল্প স্থানে পাঠদান করতে নির্দেশ দিয়েছেন। সাথে সাথে কোমলমতি ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার কথা চিন্তা করে একটি নতুন ভবনের জন্য সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরে সুপারিশ পাঠিয়েছেন।

Print
1849 মোট পাঠক সংখ্যা 1 আজকের পাঠক সংখ্যা

About jexpress

Close