সাতক্ষীরায় দুই শিশুকে গাছের সাথে বেঁধে রাখা

মাধব দত্ত,সাতক্ষীরা || সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ি ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামে দুইশিশুকে বেঁধে রাখার ঘটনা নিয়ে দেশ ব্যাপি তোলপাড় শুরু হয়েছে। শিশু রাজনকে নির্যাতন করে হত্যার ঘটনা নিয়ে সারাদেশ যখন স্বোচ্চার ঠিক তখন শ্যামনগরের পল্লীতে একই ভাবে দুই শিশু নির্যাতন কাহিনী গনমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় পর দেশবাসিকে রিতিমত হতবাক করেছে।

এদিকে,দুই শিশুকে বেধে রাখার যে ছবি বিভিন্ন গনমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তা প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে শিশু দু’টির পরিবারের সাজানো কি-না তা নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ এই ছবির বাস্তবতা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।গ্রেফতারকৃত গোলাম মোস্তফার দাবি, শিশু দুটিকে সে দড়ি দিয়ে বেধে রেখেছিল ঠিকই, কিন্তু গনমাধ্যমে যে ছবি প্রকাশিত হয়েছে তা সঠিক নয়। আমার প্রতিপক্ষরা আমাকে ফাঁসানোর জন্য শিকল ও দড়ি দিয়ে এভাবে শিশু দুটিকে গাছের সাথে পেঁচিয়ে ছবিটি সাজিয়েছে তা সাংবাদিকদেও কাছে সরবরাহ করেছে।

এদিকে, শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ি ইউনিয়নের জয়নগওে গাছে বেঁধে দুইশিশুকে নির্যাতনের ঘটনায় নির্যাতনকারী মোস্তফাকে আটক করেছে পুলিশ।এঘটনায় শ্যামনগর থানায় নির্যাতনের শিকার শিশু নাসির তরফতারের পিতা হামিদ তরফদার বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছে।বৃহস্পতিবার সকালে গ্রেফতারকৃত গোলাম মোস্তফাকে শ্যামনগর থানাপুলিশ আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণকরেছে।মামলার এজহারভূক্ত আসামি গোলাম মোস্তফাকে বুধবার বিকেল ৩টার দিকে গ্রেফতার করা হয়।গত ১৬ জুলাই এ ঘটনা ঘটলেও বুধবার বিষয়টি জানজানি হয়।নির্যাতনের শিকার শিশুরা হলো- জয়নগর গ্রামের ইসমাইল তরফদারের ছেলে ইয়াছিন (৮) ও হামিদ তরফদারের ছেলে নাছিম (৯)। এরা দু’জনেই তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। নির্যাতনকারী মোস্তফা ওই গ্রামের ইমরান আলী মোড়লের ছেলে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রতিবেশী মোস্তফার জায়গার উপর দিয়ে গড়ে ওঠা পায়ে হাঁটা রাস্তার উপর খেলছিল ইয়াছিন ও নাছিম। এ সময় বৃষ্টি শুরু হলে মোস্তফা তাদের বাড়ি চলে যেতে বলেন। কিন্তু তারা বাড়ি না গিয়ে সেখানে খেলা করায় রাস্তায় কাদা হয়ে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মোস্তফা তাদের দু’জনকে একই গাছে বেঁধে তাদেরকে শারীরিকভাবে নির্যাতনচালায়।খবর পেয়ে ইয়াছিন ও নাছিমের অভিভাবকরা এগিয়ে এলে তাদেরও মারধর করতে উদ্যত হন মোস্তফা। এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।তবে আটক গোলাম মোস্তফা জানান, আমি তাদের দড়ি দিয়ে বেধে রেখেছিলাম সঠিক।কিন্তু এভাবে বেধে রাখার ঘটনা ঠিক নয়। আমাকে ফাঁসাতে আমার প্রতিপক্ষরা এভাবে দড়ি ও শিকল দিয়ে বেধে রেখে আমার উপর দোষ চাপাচ্ছে।কালিগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মীর মনির হোসেন জানান ,জমিজমা নিয়ে আগে থেকেই তাদের সাথে বিরোধ ছিল। বেধে রাখার ঘটনাটি সঠিক হলে শিশু ইয়াছিন ও নাছিমের নির্যাতনকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
শ্যামনগর থানার ওসি ইনামুল হক জানান, এ ব্যাপারে নির্যাতনের শিকার শিশু নাসিরের পিতা হামিদ তরফদার বাদি হয়ে শ্যামনগর থানায় একটি মামলা করেছে।বুধবার রাতেই মামলাটি থানায় রেকর্ড করা হয়েছে। যার মামলা নং ৩৪। এই মামলার একমাত্র আসামি গোলাম মোস্তফাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।গাছে বেধে রাখার ঘটনা সঠিক। তবে যে ছবিটি বিভিন গনমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তা সাজানো কি-না পুলিশ খতিয়ে দেখছে। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সকালে গ্রেফতারকৃত গোলাম মোস্তফাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর মো: মোদদাচ্ছের হোসেন জানান, যে ছবিটি গনমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তার সঠিকতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে বেধে রাখার ঘটনা প্রমানিত হয়েছে। গ্রেফতারকৃত গোলাম মোস্তফাও তাদেরকে বেধে রাখার কথা স্বীকার করেছেন।যে ভাবেই বেধে রাখুকনা কেন এটি অপরাধের পর্যায় পড়ে।

Print
3117 মোট পাঠক সংখ্যা 1 আজকের পাঠক সংখ্যা

About jexpress

Close