যশোর এক্সপ্রেস ডেস্ক: আসন্ন শারদীয় দুর্গা পূজাকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগরীর ভেতরে ও এর বাইরের এলাকার মন্দিরগুলোতে থাকছে কঠোর নিরাপত্তা বলয়। পূজাকে নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করতে এবারই প্রথম প্রতিটি মণ্ডপে বসানো হচ্ছে সিসি ( ক্লোজড সার্কিড) ক্যামেরা। মাঠে থাকছে র্যাব, পুলিশ, সাদা পোশাকধারী পুলিশ, ডিবি, সিআইডি, আনসারসহ আইন-শৃংঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা। এসবের পাশাপাশি এবার নারীরা যাতে কোনোভাবেই লাঞ্ছিত না হন তার জন্য গঠন করা হয়েছে মন্দির কমিটির সদস্য ও আইন-শৃংঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে পূজা সম্প্রীতি কমিটি। এদিকে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে মাদরাসাগুলোতেও।
জানা গেছে, এবার হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় এ উৎসবটিকে নিরাপদ করতে পুলিশের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। সম্প্রতি পুলিশের সদর দপ্তরে ডিএমপি কর্মকর্তাদের নিয়ে ক্রাইম কনফারেন্সে পূজার সার্বিক বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হয়। সেখান পুলিশের ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া নানান নির্দেশনা দেন। পূজায় কীভাবে নিরাপত্তা দেয়া হবে এবং পূজা শুরুর আগে-পরে এবং শেষের দিন কীভাবে কাজ করবে আইন-শৃংঙ্খলা বাহিনী তাও বলে দেয়া হয় প্রতিটি থানা, জোনের কর্মকর্তাকে।
সার্বিক নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি মন্দিরে গঠন করা হয়েছে সম্প্রীতি কমিটি। মন্দির কমিটির সদস্য, সেই এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও আইন-শৃংঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির লোকেরা আইন-শৃংঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগযোগ রাখবেন। জঙ্গি সংগঠন বা উগ্রবাদী গোষ্ঠী যাতে কোনো ধরনের নাশকতা ঘটাতে না পারে তার জন্য সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে পুলিশকে। যেসব জঙ্গি সংগঠন এখনও সক্রিয় রয়েছে তাদের ব্যাপারে নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে।
নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাও নেয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। এরই অংশ হিসেবে এবার রাজধানীর প্রতিটি মাদরাসায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। মাদরাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পুলিশের সম্পর্ক বাড়ানোর ব্যাপারে দেয়া হয়েছে জোর তাগিদ। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, এবার পূজায় প্রতিটি মন্দিরে দেয়া হবে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ। এ জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে অনুরোধ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ চলে গেলে যাতে বিদ্যুতের ব্যাক-আপ পাওয়া যায় তার জন্য মন্দির কমিটিকেও বলা হয়েছে। সবধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রতিটি মণ্ডপে বসানো হবে সিসি (ক্লোজড সার্কিড) ক্যামেরা।
পূজায় প্রতি বছরই ঘটে যৌন হয়রানি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা। ফলে এবার নারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি কঠোরভাবেই দেখছে ডিএমপি। ইভটিজার ও ছিনতাইকারীদের নিবৃত্ত করতে পোশাকী পুলিশ ছাড়াও সাদা পোশাকধারী ডিবি ও সিআইডির সদস্যরাও মাঠে থাকছেন। কেউ কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটালেই তার বিরুদ্ধে নেয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা। জানা গেছে, পূজা শুরুর আগেই প্রতিটি মন্দির পরিদর্শন করেছেন সেই এলাকা, জোন ও থানার এসি, ডিসি ও ওসিরা। পূজা শুরুর আগে তারা আবারও পরিদর্শন করবেন সেইসব মন্দির।
এ ব্যাপারে ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুনতাসিরুল ইসলাম বাংলামেইলকে বলেন, ‘পূজায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে মাঠে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হবে। পোশাকি পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও পুলিশ মোতায়েন থাকবে। উৎসবটিকে ছন্দময় করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া য়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘পূজা মন্দিরে নারীরা যাতে কোনোভাবেই যৌন হয়রানি বা ছিনতাইয়ের শিকার না হন তার জন্য সতর্ক থাকবে পুলিশ।’