যশোর এক্সপ্রেস ডেস্ক: বিএ পাস করে চাকরির পেছনে না ঘুরে নিজেই শুরু করেন নিজেদের জমিতে চাষাবাদ। এলাকায় একজন শিক্ষিত কৃষক হিসেবে পরিচিত। তবে চলতি বছরের প্রথম দিকে ১৫ বিঘা জমিতে থাই সেভেন জাতের পেয়ারা চাষ শুরু করে একজন সফল কৃষক হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন যশোরের চৌগাছা উপজেলার জগদীশপুর গ্রামের তাহাদুদ দস্তগীর। তার পেয়ারা বাগানে নিয়মিত ১০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। ইতিমধ্যে তিনি ৫ লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি সম্ভব হবে হলে জানান তাহাদুদ। শুধু তাহাদুদ দস্তগীর নয়, তার মতো অসংখ্য শিক্ষিত যুবক উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাই পেয়ারা চাষাবাদ শুরু করেছেন। কয়েক বছরে চৌগাছায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পেয়ারার চাষ বেড়েছে। চলতি বছর প্রায় ১শ’ হেক্টর জমিতে থাই সেভেন জাতের পেয়ারা চাষ হয়েছে। উপজেলার স্বরূপদাহ, বেলেমাঠ, তারনিবাস, টেংগুরপুর, জিওলগাড়ি, বাঘারদাড়ি, আন্দারকোটা, হাজরাখানা, বাটকেমারী, পাতিবিলা মাঠে পেয়ারা চাষ বেশি হচ্ছে। পেয়ারা চাষে কৃষকরা ব্যাপক লাভবান হচ্ছে। এতে অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। তাহাদুদ দস্তগীরর জানান, থাই জাতের পেয়ারার চারা প্রথম দিকে আমাদের এলাকায় না পেয়ে এই চারা রাজশাহী থেকে সংগ্রহ করা হতো। কিন্তু গত কয়েক বছরে রাজশাহী থেকে আনা চারা লাগিয়ে চাষীরা বেশ ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তাই নিজেরাই পুরানো গাছ থেকে পেয়ারা সংগ্রহ করে সেখান থেকেই চারা তৈরি করছে। আমাদের নিজের তৈরি চারা অনেক গুণ ভালো। তিনি আরও জানান, এক বিঘা জমিতে ২০০-২২০টি চারা লাগাতে হয়। ক্ষেতে চারা রোপণের পর সঠিক পরিচর্যা করলে মাত্র ৪ মাসের মাথায় গাছে ফুল আসে এবং ফলে ভরে যায়। পোকা-মাকড়, পাখির উপদ্রপ সর্বোপরি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ১ বিঘা জমিতে বছর শেষে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি করা যায়। তাতে খরচ বাদ দিয়ে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা লাভ হয়। পেয়ারার ভরা মৌসুমে ১ কেজি পেয়ারা ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হয়। মৌসুম ব্যতিত বছরের প্রায় বারো মাসই পেয়ারা উঠানো যায়। এ সময় ফলন কম থাকলেও দাম বেশি পাওয়া যায়। ফলে খুব একটা সমস্যা হয় না। চৌগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কেএম শাহাবুদ্দিন আহমেদ জানান, উপজেলায় ব্যাপকভাবে থাই জাতের পেয়ারার চাষ শুরু হয়েছে। এটি লাভজনক ফসল। এক সময় কৃষকরা নতুন নতুন কৃষিপ্রযুক্তি গ্রহণ করতেন না। এখন সচেতন কৃষকরাই কৃষিপ্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষিপণ্য উৎপাদন করছেন। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে চাষীদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকি।

ছবি: সংগৃহীত
চৌগাছায় থাই পেয়ারা চাষে চমক
3666 মোট পাঠক সংখ্যা 1 আজকের পাঠক সংখ্যা