যশোর এক্সপ্রেস ডেস্ক:লালনসংগীত, আলোচনা সভা ও লালনমেলাসহ বর্ণাঢ্য নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে কুমারখালীর ছেউড়িয়ায় বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইজির ১২৫তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে পাঁচ দিনব্যাপী স্মরণোৎসব শেষ হচ্ছে আজ।
রাতে স্মরণোৎসবের আনুষ্ঠানিক সমাপনী ঘোষণা করবেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুস সামাদ। ইতিমধ্যে বাউল সাধকরা লালন আখড়া ছাড়তে শুরু করেছেন। মানবদর্শন ও আধ্যাত্মিক চিন্তার মরমী সাধক লালন ফকিরের ১২৫তম তিরোধান দিবসের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন দেশ-বিদেশের অসংখ্য বাউল, ভক্ত-অনুসারীরা। লালন সাঁইজির মত-পথে বিশ্বাসী এসব ভক্ত-আশেকানরা তিরোধান দিবসের অনুষ্ঠানে এসে নানা ঢঙে লালনের গান পরিবেশনের পাশাপাশি রাতভর সাধনায় ডুবে ছিলেন।
ফিরে যাওয়ার সময় লালন অনুসারী ফকির মাহতাব সাঁই বলেন, ‘আত্মিক শান্তির অন্বেষণে লালন তীর্থে এসেছিলাম। সেই প্রত্যাশিত আত্মিক শান্তি নিয়েই ফিরছি।’
লালন অনুসারী ফকিরানী রেহেনা বলেন, ‘লালনের এই ধামে এলেই মনের সব কলুষতা দূর হয়। তাই বার বার এখানে ফিরে আসি।’লালন মাজারের প্রধান খাদেম ফকির মহম্মদ আলী শাহ বলেন, ‘লালন সাঁইজির প্রয়াণ দিবসের অনুষ্ঠান শেষে ছেউড়িয়ার আখড়া বাড়ির লালন মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করে ফেরার সময় তার কাছে বিদায় নিতে এসে ভক্ত-অনুসারীরা ভাবাবেগে কান্নায় ভেঙে পড়েন।’ আবেগ আপ্লুত খাদেম কান্না বিজড়িত কণ্ঠে লালন ভক্তদের বিদায় জানান। বাউল ফকির লালন সাঁইজির তিরোধান দিবসের পাঁচ দিনের এবারের অনুষ্ঠান নির্বিঘ করতে পেরে বেশ খুশি পুলিশ প্রশাসন। কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার প্রলয় চিসিম বলেন, ‘সিসি ক্যামেরা, পর্যবেক্ষণ টাউয়ারসহ উৎসবে কয়েক স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’
কালীনদীর তীরের বিশাল মাঠের মঞ্চে পাঁচদিন ধরে চলেছে লালনের জীবন-দর্শন নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি লালনসংগীত পরিবেশনা। লালন ভক্ত-অনুসারীরা ছাড়াও সব বয়সী দর্শনাথীদের পদচারণায় মুখর ছিল আখড়া এলাকা।১২৯৭ বঙ্গাব্দের পয়লা কার্তিক মানবধর্মের মহান সাধক বাউলগুরু লালন ফকিরের তিরোধানের পর থেকেই কালীনদীর তীরে পালিত হয়ে আসছে এই লালন স্মরণোৎসব।