আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ‘ঘড়ি বালক’ নামে পরিচিতি পাওয়া ১৪ বছর বয়সী স্কুলছাত্র আহমেদ মোহামেদ পরিবারসহ কাতার পাড়ি জমাচ্ছেন। কাতার ফাউন্ডেশনের দেয়া শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ক মেধাবৃত্তি গ্রহণ করেছেন আহমেদ। সেখানেই তিনি পড়াশোনা করবেন। সোমবার হোয়াইট হাউজে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন আহমেদ। আর এর কয়েক ঘণ্টা পরই আহমেদের পরিবার থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, কাতার ফাউন্ডেশন আহমেদকে মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায় পর্যন্ত পূর্ণ মেধাবৃত্তি দেবে। বিবৃতিতে আহমেদের পরিবার জানিয়েছে, “আহমেদের অনাকাঙ্ক্ষিত গ্রেপ্তারের ঘটনার পর থেকে আমাদের পরিবার অনেক সহায়তার আহ্ববান ও সমর্থন পেয়েছি। আর তাতে আমরা অভিভূত।” বিবৃতিতে আরো বলা হয়, “হোয়াইট হাউজ থেকে সুদান, মক্কা সব জায়গাতেই ব্যক্তি থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আমাদের স্বাগত জানিয়েছে।” আহমেদ কাতার ফাউন্ডেশনের ‘তরুণ উদ্ভাবক’ প্রকল্পের আওতায় পড়াশোনা শুরু করবেন। তার পুরো পরিবারই তার সঙ্গে কাতারে থাকবে। ঘড়ি কাণ্ডের ঘটনার পর আহমেদ টেক্সাসের ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়া ছেড়ে দেন।
এরই মধ্যে আহমেদ সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরের সঙ্গেও দেখা করেছেন। সুদানের ওই নেতাকে গণহত্যার পরিকল্পনাসহ মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং দারফুর সহিংসতায় যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। এরআগে সোমবার হোয়াইট হাউজে বিজ্ঞানীদের সম্মানে অনুষ্ঠিত বার্ষিক ‘অ্যাস্ট্রোনমি নাইট’-এ আহমেদ প্রেসিডেন্ট ওবামার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং কথা বলেন। কিশোর আহমেদের সঙ্গে দেখা হওয়ার সময় ওবামা বলেন, তরুণদের দমন নয় বরং তাদের কাজে উৎসাহিত করা উচিত।
কিছুদিন দিন আগে শিক্ষকদের খুশি করার জন্য নিজের তৈরি করা একটি ঘড়ি নিয়ে স্কুলে হাজির হয়েছিল ১৪ বছরের কিশোর আহমেদ মোহামেদ। কিন্তু স্কুলে আহমেদের নিয়ে আসা ঘড়িটিকে ‘ঘড়ির ছলে বানানো বোমা’ ভেবে পুলিশকে খবর দেয় টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের আর্ভিং শহরের ম্যাকআর্থার হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। তবে সুদানি বংশোদ্ভূত বালক মোহামেদকে গ্রেপ্তার করা হলেও তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনেনি পুলিশ। ওই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলে। আহমেদ রাতারাতি সেলিব্রেটিতে পরিণত হন। নাসার বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে ফেইসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও এ প্রতিক্রিয়ায় শামিল হয়েছিলেন।