অজ্ঞাত ছেলেটিকে বাঁচাতে এগিয়ে এসেছেন অনেকে

যশোর এক্সপ্রেস ডেস্ক: যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অজ্ঞাত (১৭) যুবকটির পাশে দাঁড়িয়েছে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। এমনকি তার করুণ পরিণতির কথা জেনে ছুটে গেছেন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দও। ছেলেটিকে সুস্থ করতে সাধ্যমত চেষ্টা করছেন সকলেই। তাদের সহানুভূতিতে ছেলেটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স এন্ড হসপিটালে। গতকাল রাতে যশোর থেকে তাকে ঢাকায় নেয়া হয়।

গত ৯ জানুয়ারি সকালে ওই যুবক সাতক্ষীরাগামী যাত্রীবাহী বাসের ছাদে করে কোনো গন্তব্যে যাচ্ছিলো। পথিমধ্যে যশোরের শার্শা উপজেলার নাভারণ আকিজ বিড়ি ফ্যাক্টারির সামনে পৌছুলে বাসের ছাঁদ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয় সে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। এরপর ১১জানুয়ারি গ্রামের কাগজের ফটো সাংবাদিক সাজ্জাদুল কবির মিটনের তোলা একটি ছবি প্রকাশ করা হয়। কিন্তু তাকে সনাক্ত করার মত কাউকে পাওয়া যায়নি। শুরুতে হাসপাতালের মেডিসিন ব্যাংক, কর্মরত চিকিৎসক, সেবিকা, রোগী কল্যাণ সমিতি ও রোগীদের স্বজনরা তার চিকিৎসায় বেশ অবদান রাখেন। কিন্তু সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের অভাবে তেমন কোন উন্নতি হচ্ছিল না। এসময় এগিয়ে আসেন শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা তিতাস আহমেদ ও ফয়সাল খান। এ সময়ে শহরের ল্যাবস্ক্যান মেডিকেল সার্ভিসেস কর্মকর্তারাও এগিয়ে আসেন। তারা সিটিস্ক্যানসহ আর্থিক সহযোগিতা করেন। এসময়ের মধ্যে বিষয়টি গ্রামের কাগজের সংবাদকর্মীদের নজরে আসে। স্টাফ রিপোর্টার আশিকুর রহমান শিমুল ও উজ্জ্বল বিশ্বাসের দেয়া তথ্যে সংবাদকর্মীদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করে। যে কারণে সাবএডিটর শাপলা রহমানসহ অন্যান্য প্রতিবেদকদের সমন্বয়ে অসুস্থ ছেলেটিকে দেখভালে ব্যবস্থা হয়। এরই প্রয়োজন হয় রক্তের। ঠিক সেই সময়ই ৪ তরুন এগিয়ে আসে রক্ত দিতে। এছাড়া জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির নেতা আবু মুছা, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, সম্পাদক এসএম তৌহিদুর রহমানসহ আরো অনেক সাংবাদিক এগিয়ে আসেন।

খবর পেয়ে বসে থাকতে পারেননি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন। গতকাল ছুটে যান ছেলেটির শয্যাপাশে। এসময় হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাক্তার শ্যামল কৃষ্ণ সাহা, মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার অজয় কুমার সরকার, সার্জারী বিভাগের জুনিয়র কন্সালটেন্ট ডাক্তার শরিফুল আলম খান, হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার এম শামসুল হাসান দোদুলও সেখানে ছিলেন। শহিদুল ইসলাম মিলন ছেলেটির চিকিৎসায় অর্থ সহায়তাও করেন। এদিকে যশোর রোটারী ক্লাব অব রূপান্তরের উদ্যোগে ছেলেটির জন্য ১১ হাজার টাকা অর্থ সহায়তা দেয়া হয়। তবে ছেলেটিকে বাঁচাতে উন্নত চিকিৎসা জরুরি হয়ে পড়েছে। যে কারণে সহানুভূতি নিয়ে এগিয়ে আসা মানুষগুলো তাকে পাঠিয়েছেন ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স এন্ড হসপিটালে। গতকাল রাত সাড়ে ১০টায় কুইন্স হসপিটাল কর্তৃপক্ষের দেয়া এ্যাম্বুলেন্সে গ্রামের কাগজের স্টাফ রিপোর্টার উজ্জ্বল বিশ্বাস ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির নেতা আবু মুছা ছেলেটিকে নিয়ে ঢাকায় গেছেন। আজ সকালে তাকে হাসপাতালে ভর্তির কথা রয়েছে। তবে ছেলেটির পূর্ণ চিকিৎসায় আরো সহায়তার প্রয়োজন। সবাই এগিয়ে আসলে অজ্ঞাত এ ছেলেটি হয়তো বেঁচে যাবে। ফিরে আসবে অচেতন অবস্থা থেকে। ফিরতে পারবে স্বজনের কাছেও। তাই ছেলেটির চিকিৎসায় সহৃদয়বান ব্যক্তিদের প্রতি আবেদন থাকলো।
Print
1756 মোট পাঠক সংখ্যা 1 আজকের পাঠক সংখ্যা

About admin

Close