যশোর এক্সপ্রেস ডেস্ক: অসহায় মানুষের পাশের বিশ্বস্ত বন্ধুর মতো দাঁড়াতে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চার দিনব্যাপী (২৬-২৯ জানুয়ারি) পুলিশ সপ্তাহ ২০১৬ শুরুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মঙ্গলবার সকালে এ আহ্বান জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘অসহায় জনগণের পাশে বিশ্বস্ত বন্ধুর মতো দাঁড়াতে হবে। যাতে মানুষ ভরসা পায়।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতা মোকাবিলায় পুলিশের সুদৃঢ় ও সাহসী ভূমিকা প্রশংসাযোগ্য।’
‘দেশের প্রতিটি উন্নয়নে বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকা রয়েছে’ বলেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০১৫ সালের ৪ জানুয়ারি থেকে বিএনপি-জামায়াত দেশে যে সন্ত্রাস ও সহিংসতা শুরু করে তাদের পেট্রোলবোমায় ২৩১ নিরীহ মানুষ নিহত হয়। এক হাজার ১৮০ জন আহত হয়, ২ হাজার ৯০৩টি গাড়ি, ১৮টি রেল ও ৮টি লঞ্চে তারা আগুন দেয়।’‘পরিকল্পিতভাবে টার্গেট করে ৭০টি সরকারি অফিস ও স্থাপনা ভাঙচুর করে এবং আগুনে পুড়িয়ে দেয়’ যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের অনৈতিক কর্মসূচি রুখতে সুদৃঢ় ও সাহসী ভূমিকা রেখেছিল পুলিশ। পুলিশের কর্মক্ষেত্র ও কর্মব্যপ্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেবল চুরি-ডাকাতি মোকাবিলায় নয়, সাইবার ক্রাইম, মানি লন্ডারিং, মাদক ও চোরাচালান রোধ, নারী ও শিশু পাচার রোধে পুলিশ যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে। আরও শক্ত ভূমিকা রাখতে হবে।’ পুলিশে ৫০ হাজার নতুন পদ সৃষ্টি করা হবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গত সাত বছরে আমরা পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোতে ৭৩৯টি ক্যাডার পদসহ ৩২ হাজার ৩১টি পদ সৃষ্টি করেছি। জনসংখ্যার অনুপাতে পুলিশের এ জনবল যথেষ্ট নয়। আরও ৫০ হাজার নতুন পদ সৃষ্টি করা হবে। ইতোমধ্যে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
২৭৭টি ক্যাডার পদসহ ১৩ হাজার ৫৫৮টি পদে পুলিশ সদস্যদের নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান তিনি। এর আগে সকাল ১০টায় প্যারেড পরিদর্শন এবং সোয়া ১০টার দিকে তিনি প্যারেডের সালাম গ্রহণ করেন। সারাদেশের বিভিন্ন পুলিশ ইউনিটের সমন্বয়ে গঠিত ১৩টি কন্টিনজেন্টের নয়নাভিরাম প্যারেড পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। এবার পুলিশ সপ্তাহের প্যারেডে অধিনায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দেন চাঁদপুর জেলার পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার। তার নেতৃত্বে পরিচালিত প্যারেডে অংশ নিচ্ছেন সহস্রাধিক পুলিশ সদস্য। জেন্ডার সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নে এটা নতুন মাইলফলক।
পুলিশ সপ্তাহে ২০১৫ সালে অসীম সাহসিকতা, বীরত্বপূর্ণ কাজ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য ১০২ জন পুলিশ সদস্যকে পদক প্রদান করা হয়। এদের মধ্যে ১৯ জন পুলিশ সদস্যকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)’, ২০ জনকে ‘রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম)’, ২৩ জনকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)- সেবা’ ও ৪০ জনকে ‘রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম)-সেবা’ এ চার ধরনের পদক প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী তাদের পদক পরিয়ে দেন।