যশোর এক্সপ্রেস ডেস্ক: ইতিমধ্যে ‘গাছ মানব’ হিসেবে পরিচিত আবুল বাজেদারের খবর ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বময়। এ খবরে বিশ্ব মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। বিভিন্ন দেশের পত্রিকাগুলোর বড় ধরনের ফিচারে পরিণত হয়েছেন তিনি। আবুলের নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে লন্ডনের ডেইলি মিরর। এতে বলা হয়েছে, ১০ বছর বয়স থেকেই ‘হিউম্যান পাপিলোমা ভাইরাসে’র সংক্রমণে ভুগছেন খুলনার এই যুবক। তিনি পেশায় একজন রিকশাচালক। তার হাত ও পা এমনভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে যা দেখলে যেকেউ বলবেন এটা কোন গাছের শিকড়, বাকল। এ জন্য তিনি পরিচিতি পেয়েছেন ‘ট্রি ম্যান’ বা গাছ মানব হিসেবে।
আবুল বাজেদার ভর্তি হয়েছেন ঢাকার একটি হাসপাতালে। এখন তার চিকিৎসা কি তা নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের চিকিৎসকরা কাজ করছেন। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারির প্রধান ড. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, বিশেষজ্ঞদের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করার পর আবুল বাজেদারের চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। হিউম্যান পাপিলোমা ভাইরাস এমন এক গ্রুপের ভাইরাস- যা, ত্বক ও শরীরের আর্দ্র ঝিল্লিকে আক্রান্ত করে। এমন শতাধিক রকমের ভাইরাস আছে। এর মধ্যে ৩০ রকম ভাইরাস মানুষের জননেন্দ্রীয়কে আক্রান্ত করতে পারে। এ ভাইরাসের সব রকমের সংক্রমণেই ত্বকে আঁচিল সৃষ্টি করে। এ সংক্রমণ খুব দ্রুত গতিতে ত্বকের বাইরের স্তরে ছড়িয়ে পড়ে। বেশির ভাগ আঁচিল ফুলকপির মতো ছড়িয়ে পড়ে। তা ত্বকের ওপরে অল্প জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। এমন আঁচিল সাধারণত দেখা যায় বাহুতে, মুখে ও কপালে।
নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড লিখেছে, বাংলাদেশের গাছ মানব আবুল বাজেদারকে একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বিরল এক রকম ত্বকের সংক্রমণে ভুগছেন। তবে এ পত্রিকা এ রোগকে ‘এপিডারমোডাইসপ্লাসিয়া ভেরাসিফরমিস’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এতেও বলা হয়েছে, এ রোগে ত্বকের ওপরে আঁচিলের মতো বস্তু সৃষ্টি হয়। কখনো কখনো তা দেখতে গাছের শাখার মতো। ওদিকে ডেইলি মেইল লিখেছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা কিভাবে এ রোগের চিকিৎসা করা যায় সে সিদ্ধান্ত নিতে কাজ করছেন। স্থানীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, এ সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ার প্রকৃত গাছ মানব দেদে কোস্বারা মারা গেছেন। তবে এ রোগের কারণে তিনি মারা যান নি। তার কাহিনী প্রথম প্রকাশ করে ডিসকভারি চ্যানেল। ২০০৮ সালে তার দেহ থেকে ৬ কিলোগ্রাম আঁচিল অপারেশন করে আলাদা করা হয়। তখনই তাকে নিয়ে ডিসকভারি চ্যানেল রিপোর্ট প্রচার করে।