এক্সপ্রেস ডেস্ক: বাংলাদেশের সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার এবং মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের চারবছরেও কোন কূলকিনারা হয়নি। ২০১২ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি ঢাকায় নিজেদের ভাড়া বাসায় হত্যার ঘটনার পরপরই তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এই হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করা হবে। কিন্তু ৪৮ মাস পার হয়ে গেলেও, এই হত্য রহস্য এখনো অমীমাংসিত। ধরা পড়েনি হত্যাকারীরাও। আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের কিনারা না হওয়ায় হতাশ তাদের স্বজনরাও।
প্রায় সাড়ে তিনবছর ধরে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান বা র্যাব। মামলার তদন্ত দ্রুত শেষ করার জন্য নিম্ন আদালত, উচ্চ আদালতের নির্দেশ রয়েছে। এ পর্যন্ত ৪৯ বার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময় বৃদ্ধির আবেদন করা হয়েছে, কিন্তু এখনো এই তদন্তের কোন কিনারা হয়নি। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা, এএসপি মহিউদ্দিন আহমেদ বলছেন, মামলাটি স্পর্শকাতর এবং জটিল হওয়ায় তদন্তে সময় লাগছে। মহিউদ্দিন আহমেদ বলছেন, বিভিন্ন পয়েন্টে তদন্ত চলছে। কোর্টের চাহিদা অনুযায়ী, নিয়মিত সেখানে প্রতিবেদন দেয়া হচ্ছে।
সাগররুনির হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন এবং হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে আসছে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন। তাদের অভিযোগ, একটি মহলের অনাগ্রহের কারণেই এই মামলার কিনারা হচ্ছে না। যদিও বরাবরই তদন্তে গুরুত্ব দেয়ার দাবি করা হয়েছে সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে। প্রথম থেকেই এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত পর্যবেক্ষণ করেছেন সাংবাদিক এবং ব্লগার আবু সুফিয়ান। নিজেদের সহকর্মীরা নিহত হলেও, সাংবাদিকরাও এক্ষেত্রে তেমন একটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি বলেই তিনি মনে করেন।
আবু সুফিয়ান বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর একটি প্লাটফর্মে এসে সাংবাদিকরা সবাই আন্দোলন করতে শুরু করেন। সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে রাজপথে এসে আন্দোলন শুরু করেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাওয়াতের পর সেই আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়ে। নিহতদের স্বজনরা বলছেন, যতই দিন যাচ্ছে, তারা যেমন হতাশ হয়ে পড়ছেন, তাদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও চাপা পড়ে যাচ্ছে। এই দম্পতির একমাত্র সন্তানটি এখন তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে। প্রায়ই বাবা মায়ের নানা স্মৃতির কথা সে বলে, তবে হত্যাকাণ্ডের দিনের কোন ঘটনা আর সে মনে করতে চায় না।
সূত্র: বিবিসি