চক্রের আরও লোকের নাম ফাঁস করলেন দেগুইতো

এক্সপ্রেস ডেস্ক: বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট থেকে চুরির ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ফিলিপাইনে পাচারের অভিযোগ নিয়ে দেশটির সিনেট কমিটির পঞ্চম দিনের শুনানিতে রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশন আরসিবিসি’র সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক মায়া দেগুইতো কোম্পানির আরও কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। শুনানিতে মুখোমুখি হয়েছেন ঘটনার দুই প্রধান আলোচিত চরিত্র ক্যাসিনো ব্যবসায়ী কিম অং এবং রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশন আরসিবিসি’র সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক মায়া দেগুইতো। তাদের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করেছে দেশটির অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিল (এএমএলসি)। দেগুইতোর বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্ত্বেও তিনি বলেছেন, গত ফেব্রুয়ারির ৫ তারিখে বাংলাদেশ থেকে চুরি যাওয়া রিজার্ভের টাকা তার একাউনন্টে এলেও সেটা তোলার জন্য তিনি তাড়াহুড়া করেননি। বরং তিনি সাথে সাথে কোম্পানির আঞ্চলিক সেলস ডিরেক্টর ব্রিগেট ক্যাপেনা, আরসিবিসির কার্যনির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট রাউল ট্যানকে জানিয়েছেন। তারপরেই ফেব্রুয়ারির ৯ তারিখে তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল টাকা ব্যাংক থেকে তোলার জন্য। তিনি আরও বলেন, ব্যাংকের কোন পূর্ব ঘোষণা এবং কাগজপত্র ছাড়া ঐ টাকা তার একাউন্টে দেখে তিনি নিজেও বিস্মিত হয়েছিল। টাকা পেয়েও তিনি ব্যাংকের কাস্টমার রিলেশন অফিসার আঙ্গেলা টরেসকে বলেছিলেন ইমেইলে ঐ টাকার চালানপত্র পাঠানোর জন্য যাতে ঐ ফান্ডের সমস্ত তথ্য থাকবে। তিনি দুপুর দুইটার দিকে ইমেইল পাঠালেও উত্তর পেতে পেতে ৬টা বেজে যায়। এদিকে টাকা তার একাউন্টে আসার কয়েক ঘণ্টা পরেই তিনি ক্যাসিনো ব্যবসায়ী কিম অং এর ফোন কল পান। সেখানে তাকে নির্দেশনা দেয়া হয় ঐ ডলার ভাঙ্গিয়ে সমপরিমাণ অর্থ ব্লুমবেরি হোটেল এবং ইস্টার্ন লেইজুরের ঠিকানায় পাঠাতে বলা হয়। সন্ধ্যায় তার কোম্পানির জেলা প্রধান নেসটর পিনেডা তাকে ফোন করে একাউন্ট আটকে রাখতে পারবে কিনা। তিনি তখন তার আরেক বস সেলস ডিরেক্টর ব্রিগেট ক্যাপেনাকে ফোন করে পিনেডার একাউন্ট আটকে রাখার অনুরোধের কথা বলেন। কিন্তু ফেব্রুয়ারির ৯ তারিখে ব্যাংক থেকে ফিরতি চালানের কাগজ আসার আগেই টাকার আদান প্রদানের কাজ শুরু হয়ে যায়। এদিকে, ফিলিপাইনের ব্যুরো অব ইন্টারনাল রেভিন্যু (বিআইআর) কমিশনার কিম হেনারেস মঙ্গলবার সিনেটের ব্লু রিবেন কমিটির কাছে প্রকাশ করেন যে, ফিলিপাইন রেমিটেনস কোম্পানি (ফিলরেম) অর্থ প্রেরনকারী সংস্থা হিসেবে অনুমোদিত ছিল না। রিজার্ভ পাচারের বিষয়ে এর আগের চার দফা শুনানিতে এ পর্যন্ত অভিযুক্ত হিসেবে উঠে এসেছে চীনা ব্যবসায়ী কিম অং, ওয়েক্যাং জু, উইলিয়াম গো, ফিলিপিন্স ব্যাংক আরসিবিসি’র মায়া দেগুইতো, অ্যাঞ্জেলা তোরেস ও লোরেনজো ট্যান এবং বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান ফিলরেমের প্রেসিডেন্ট সালুদ বাতিস্তার নাম। এছাড়াও চীনের দুই ক্যাসিনো অপারেটর গাও এবং দিং- অর্থ পাচারের এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলেও জানিয়েছেন চীনা ব্যবসায়ী কিম অং।সোমবার মায়া দেগুইতো এবং তার আইনজীবী ফার্দিনান্দ টোপাকিও’র বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছেন আরসিবিসি’র প্রেসিডেন্ট লোরেনজো ট্যান। ইতিমধ্যেই মিস দেগুইতোসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ফিলিপাইনের এন্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিল।

Print
2945 মোট পাঠক সংখ্যা 1 আজকের পাঠক সংখ্যা

About admin

Close